সংবাদ শিরোনাম :
মুন্সীগঞ্জে গৃহবধুকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা মামলার দুই আসামীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ, অপর আসামী কারাগারে !

মুন্সীগঞ্জে গৃহবধুকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা মামলার দুই আসামীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ, অপর আসামী কারাগারে !

নিজস্ব প্রতিনিধি 

মুন্সীগঞ্জে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার কামারখাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে হত্যা মামলার ৩ আসামীকে বাড়িতে পেলেও একজনকে আটক করে বাকি দুই আসামীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মামলার বাদী শ্রী কৃষ্ণ সরকার নিজেই পুলিশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন।

এদিকে অপর আসামী দীপ্ত রায়কে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার ( ৩ অক্টোবর) আদালতে প্রেরণ করলে বিকাল ৩টার দিকে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ আমলী আদালত ৪ এর বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাসিনা হোসেন তুষি ।

ভুক্তভোগী শ্রী কৃষ্ণ সরকার বলেন, আমার মেয়ে স্বর্ণা রায়কে যৌতুকের জন্য শরীরে আগুন দিয়ে মেরে ফেলে ওর স্বামীর বাড়ির লোকজন। আমি এ ঘটনায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর মুন্সীগঞ্জ নারী শিশু আদালতে মামলা দায়ের করলে পুলিশ দির্ঘদিন হলেও আসামীদের ধরছিল না । পরে আমিসহ আমার ৩ আত্নীয় বুধবার ( ২ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে পুলিশ নিয়ে আসামীদের ধরতে আসামীদের বাড়িতে যাই। বাড়িতে গিয়ে মামলার ৩ আসামী দীপ্ত রায়, ঝর্ণা রায় ও দিলীপ রায়কে বাড়িতে পাই। আমি পুলিশকে আসামীদের দেখিয়ে চলে আসি। কিন্তু পরে টঙ্গিবাড়ী থানা এসআই লিপন সরকার এক আসামী দীপ্ত রায়কে ধরে থানায় আনলেও বাকি দুই আসামীকে ছেড়ে দিয়ে চলে আসে। পরে আমি বিষয়টি জানতে পেরে এসআই লিপন সরকারকে দুই আসামী রেখে আসার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসামী দিলীপ রায় অসুস্থ ও তার স্ত্রী ঝর্ণা রায় মহিলা হওয়ায় মহিলা পুলিশ আমাদের সাথে না থাকায় তাদের ছেড়ে দিয়ে এসেছি।

তবে এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানা পুলিশের অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক এসআই লিপন সরকার বলেন, আমি আসামীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এক আসামীকেই পেয়েছি। বাকি কোন আসামী পাইনি। তিনি আরো বলেন, মামলার প্রধান আসামী দীপ্ত রায়কে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সুত্রে জানাগেছে, গত ২০২৩ সালে ৮ই সেপ্টেম্বর টঙ্গিবাড়ী উপজেলার কামারখাড়া গ্রামের মিজি বাড়ির দিলিপ রায়ের ছেলে দিপ্ত রায় একই গ্রামে কৃষ্ন সরকারের মেয়ে স্বর্না রায়কে পরিবারের অমতে জোড়পূর্বক বিয়ে করে। দিপ্ত রায় এলাকায় ভবুঘুরে ও বিভিন্ন নেশা করে বেড়াতো। বিয়ের কিছু দিন পর হতেই দিপ্ত ও তার মা ঝর্ণা রানি রায় স্বর্ণাকে বাবা বাড়ি হতে যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য চাপ ও মারধর করতে থাকে। স্বর্ণা বিষয়টি তার পরিবার ও আত্নীয় স্বজনকে একাধিকবার জানায়। পরে ৩০ জুলাই সকালে যৌতুকে দাবীতে স্বর্ণাকে মারধর করে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় তার স্বামী ও শাশুড়ি। স্বর্ণা আগুনে গুরুতর দগ্ধ হলে স্বর্ণার আত্নীয় স্বজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সেখা হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করলে সেখানে ১ মাস ১৬ দিন মৃত্যূর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ১৬ ই সেপ্টেম্বর সে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মৃত্যূ বরণ করে। এ ঘটনায় নিহত স্বর্ণার বাবা বাদি হয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর মুন্সীগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করে।

Facebook Comments Box





© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ দৈনিক নাগরিক বাণী